শিরোনাম:
ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
---

Newsadvance24
বৃহস্পতিবার ● ২২ মে ২০২৫
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » তিন দফা দাবিতে কমলনগরে প্রাথমিকের শিক্ষকদের অর্ধদিবস কর্মবিরতি
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » তিন দফা দাবিতে কমলনগরে প্রাথমিকের শিক্ষকদের অর্ধদিবস কর্মবিরতি
২৪৮ বার পঠিত
বৃহস্পতিবার ● ২২ মে ২০২৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

তিন দফা দাবিতে কমলনগরে প্রাথমিকের শিক্ষকদের অর্ধদিবস কর্মবিরতি

কমলনগর (লক্ষ্মীপুর)প্রতিনিধি

---

এন্ট্রি লেভেলে ১১তম গ্রেডে বেতনসহ তিন দফা দাবিতে সারাদেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা টানা কর্মবিরতি কর্মসূচি করছেন। গত ৫ মে থেকে তারা প্রতি কর্মদিবসে এক ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেন। এরপর ১৭ মে থেকে দুই ঘণ্টার কর্মবিরতি করেছেন। এবার অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করে যাচ্ছেন সহকারী শিক্ষকরা।

‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ’-এর ডাকে এ কর্মসূচি পালন করছেন সারা দেশের সহকারী শিক্ষকগণ তারই ধারাবাহিকতায় বৃহষ্পতিবার (২২ মে) সকালে লক্ষ্মীপুর জেলার কমলনগর উপজেলায় অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করে আসছেন শিক্ষকরা।

উপজেলা শিক্ষক ঐক্য পরিষদের নেতা হাজির হাট মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোঃ ইবরাহীম জানান,’আমরা ৫ মে থেকে ১৫ মে পর্যন্ত প্রত্যেক কর্মদিবসে এক ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছি। ১৭ মে থেকে দুই ঘণ্টা কর্মবিরতি করেছি। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী-গত দুইদিন ধরে সফলভাবে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করছি’।

কমলনগরের অন্যতম শিক্ষক নেতা মোহাম্মদ মাকছুদুর রহমান বলেন,’৫ মে থেকে দেশব্যাপী টানা কর্মবিরতি পালন করলেও সরকারের তরফ থেকে কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।দাবি পূরণ হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচী চলমান থাকবে বলেও জানান এ শিক্ষক’।

এদিকে, সহকারী শিক্ষকদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আলোচনা করতে বৈঠকের আহ্বান করেছেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) আবু নূর মো. শামসুজ্জামান। গতমঙ্গলবার বিকেল ৪টায় অধিদপ্তরের সম্মেলনকক্ষে এ বৈঠক হয়। অধিদপ্তরের পলিসি ও অপারেশন পরিচালক বৈঠকে অংশ নিয়ে শিক্ষকদের দাবিগুলো শুনেন।এবং দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়ে থাকেন।কিন্তু শিক্ষকদের প্রধান দাবি ১১তম গ্রেড এন্ট্রি লেভেল প্রদানের বিষয়ে তিনি সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের সিদ্ধান্ত বলে জানিয়ে দেন।তারই ধারাবাহিকতায় সম্পূরক মতবিনিময় হিসেবে বুধবার ও বৃহস্পতিবারেও মহা পরিচালকের দপ্তর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে মহাপরিচালক শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় মিলিত হন।আলোচনা শেষে শিক্ষক নেতৃবৃন্দ নিজস্ব ফেসবুক লাইভে আলোচনা ফলপ্রসু উল্লেখ করলেও দৃশ্যমান ব্যবস্থা তথা ১১তম গ্রেডের জিও জারি করা পর্যন্ত কর্মসূচী চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দেন।

বৃহস্পতিবার কমলনগরের বেশ কয়েকটি বিদ্যালয় ঘুরে প্রত্যক্ষ করা হয়, শিক্ষকরা যথাসময়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকলেও শ্রেণি কার্যক্রম থেকে বরাবরই বিরত ছিলেন। শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের কিচির মিচির শব্দ শুনা গিয়েছে।

কমলনগর উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক সাধারন সম্পাদক আবদুস সহিদ বলেন, এইচএসসি এসএসসি পাশ করে বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টে ১০ম/১১তম গ্রেডে নিয়োজিত থাকলেও এন্ট্রি লেভেল স্নাতক দ্বিতীয় বিভাগ পাশ চাওয়া হলেও প্রাথমিক শিক্ষকদেরকে ১৩তম দেয়া সত্যি লজ্জাকর বিষয়।তিনি আরো বলেন আমরা ১০ম গ্রেডের দাবিতে আন্দোলন করে আসলেও দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনা নিয়ে ১১তম গ্রেড প্রদানের নূন্যতম দাবি করেছি’।

উপজেলা প্রাথমিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান জানান,”আমরা কোন আশ্বাসে আর বিশ্বাস রাখতে চাইনা, এমন বিশ্বাস রেখে অতীতে আমরা কর্তপক্ষের বিশ্বাস ভঙ্গের শিকার হয়েছি।সুতরাং এবারে আমাদের চুড়ান্ত হিস্যা বুঝিয়ে দেয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে”।

কমলনগর প্রাথমিক শিক্ষকদের অন্যতম নেতা কাজী মুহাম্মদ ইউনুছ বলেন,’কেন্দ্রীয় নেতাদের ফেসবুক লাইভে শুনেছি ‘মহাপরিচালকের দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে - সহকারি শিক্ষকদের ১১ তম গ্রেড ও বাজেট প্রাক্কলনসহ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে ‘।এজন্য মহাপরিচালককে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি জনপ্রশাসন ও তৎপরবর্তীকালে অর্থ মন্ত্রণালয় যেনো কোন অজুহাতে দাবি পূরণে হেয়ালিপনা না প্রদর্শন করতে পারেন এবং দাবিকৃত ১১তম গেজেট জারি হওয়া পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অর্ধদিবস ও পর্যায়ক্রমে পূর্ণ দিবস কর্মবিরতির কর্মসূচী চলমান রাখা হবে।

সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি

০১.সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেড বাস্তবায়নে সম্প্রতি ঢাকায় কয়েক দফা সমাবেশ করেছেন প্রাথমিকের শিক্ষকরা। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত কনসালটেশন কমিটির সুপারিশের যৌক্তিক সংস্কার করে সহকারী শিক্ষক পদকে অ্যান্ট্রি পদ ধরে ১১তম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ।

২. ১০ বছর ও ১৬ বছরপূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির জটিলতা নিরসন।

৩. প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ পদোন্নতিসহ দ্রুত পদোন্নতি প্রদান।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বর্তমানে দেশে ৬৫ হাজারের বেশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পৌনে ৪ লাখেরও বেশি শিক্ষক কর্মরত। তাদের মধ্যে প্রধান শিক্ষকদের বর্তমান (প্রস্তাবিত) বেতন গ্রেড ১০তম। আর সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড ১৩তম।





আর্কাইভ