শিরোনাম:
ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
---

Newsadvance24
সোমবার ● ২৯ মে ২০২৩
প্রথম পাতা » জাতীয় » কমলনগরে অতিদরিদ্রদের জন্য ৩৬ দিনের কর্মসূচি প্রকল্প সপ্তাহে শেষ
প্রথম পাতা » জাতীয় » কমলনগরে অতিদরিদ্রদের জন্য ৩৬ দিনের কর্মসূচি প্রকল্প সপ্তাহে শেষ
৫৫২ বার পঠিত
সোমবার ● ২৯ মে ২০২৩
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

কমলনগরে অতিদরিদ্রদের জন্য ৩৬ দিনের কর্মসূচি প্রকল্প সপ্তাহে শেষ

ইউছুফ আলী মিঠু, নিউজ এ্যাডভান্স

---কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) : লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে অতিদরিদ্রদের জন্য ৩৬ দিনের কর্মসংস্থান কর্মসূচি প্রকল্পের কাজ তিন থেকে চার দিনে শেষ করা হয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিসকে ম্যানেজ করে চেয়ারম্যানরা তড়িঘড়ি করে শ্রমিকের পরিবর্তে এক্সকাভেটর (ভেকু) মেশিন দিয়ে কাজ করে শেষ করায় এতে মোটা অঙ্কের টাকা লোপাট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির ২য় পর্যায়ের ৪৩টি প্রকল্পে ২হাজার ৭শ’ ৬১ জন শ্রমিক ৩৬ দিন কাজ করার কথা রয়েছে। এতে শ্রমিক প্রতি ৪শ’টাকা করে ৩কোটি ৯৭লাখ ৫৮হাজার টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। চলতি বছরের ১০মার্চ কাজ শুরু হয়ে আগামী ৫ জুন শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

কিন্তু সরজমিন উপজেলার কালকিনি, সাহেবের হাট, চরমার্টিন, চরফলকন, পাটারিরহাট হাজিরহাট, তোরাবগঞ্জ, চরকাদিরা ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, ৯ইউনিয়নের কোন প্রকল্পেই শ্রমিক পাওয়া যায়নি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চেয়ারম্যানরা প্রকল্প এলাকার ইউপি সদস্যদের প্রকল্পের সভাপতি করে কিছু কিছু প্রকল্পে ভেকু মেশিন দিয়ে ৩-৪ চার দিন কাজ করে শেষ করেছেন। আবার কিছু কিছু প্রকল্পে ৪-৫জন শ্রমিক দিয়ে ৭-৮দিন কাজ করে কাজ শেষ করে মোটা অঙ্কের টাকা আত্মসাৎ করার পায়তারা করছেন।

 

সরকার অতি দরিদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে শ্রমিক প্রতি গড়ে চার’শ টাকা করে মজুরী নির্ধারণ করে। শ্রমিকদের ওই মজুরী মোবাইলে বিকাশ সিমের মাধ্যমে তাদের একাউন্টে জমা হওয়ার কথা। কিন্ত চেয়ারম্যানরা শ্রমিকের নামে সিম ক্রয় করে নিজেদের কাছে রেখে দিয়েছেন।

---

উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নে ৫টি প্রকল্পে ৩শ’ শ্রমিক ৩৬দিন কাজ করার কথা রয়েছে। ওই ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আমানিয়া সড়কে ৬০জন ৩৬ দিন কাজ করার কথা কিন্তু ওই প্রকল্পে ৫-৬ জন শ্রমিক ৬-৭দিন কাজ করে প্রকল্পের কাজ শেষ করা হয়েছে। আবার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে রামগতি -কমলনগর মহাসড়কের প্রবাসী মনিরের বাড়ি হতে উত্তর দিকে পুল পর্যন্ত দুলাল মেম্বার সড়ক এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডে চরজাঙ্গালিয়া এসসি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে দক্ষিণ দিক কীর্তিবাস সড়কে শ্রমিকের পরিবর্তে এক্সকাভেটর (ভেকু) মেশিন দিয়ে ৩-৪দিন কাজ করেছেন। ওই ইউনিয়নে ৩শ’ শ্রমিকের গড়ে ৪শ’ টাকা করে ৩৬দিনে ৪৩লাখ ২০হাজার টাকার কাজ হওয়ার কথা থাকলেও ৭-৮লাখ টাকার কাজ করে বাকি টাকা আত্মসাতের পাঁয়তারা করছেন চেয়ারম্যান। এছাড়াও চরকালকিনি ইউনিয়নে ৬টি প্রকল্পে ৩৬৪ শ্রমিকের জন্য ৫২লাখ ৪১হাজার ৬শ’, পাটারিরহাট ইউনিয়নে ৫টি প্রকল্পে ২৩০জন শ্রমিকের জন্য ৩৩লাখ ১২হাজার, চরকাদিরা ইউনিয়নে ৫টি প্রকল্পে ৩২৩জন শ্রমিকের জন্য ৪৬লাখ ৫১হাজার ২শ’, তোরাবগঞ্জ ইউনিয়নে ৫টি প্রকল্পে ৩০৬জন শ্রমিকের জন্য ৪৪লাখ ৬হাজার ৪শ, চরমার্টিন ইউনিয়নে ৪টি প্রকল্পে ৩১৪ শ্রমিকের জন্য ৪৫লাখ ২১হাজার ৬শ’, চরলরেন্স ইউনিয়নে ৪টি প্রকল্পে ২৯১ জন শ্রমিকের জন্য ৪১লাখ ৯০হাজার ৪শ’, সাহেবেরহট ইউনিয়নে৬টি প্রকল্পে ৪০৯ জন শ্রমিকের জন্য ৫৮লাখ ৮৯হাজার ৬শ’ চরফলকন ইউনিয়নে৩টি প্রকল্পে ২২৪জন শ্রমিকের জন্য৩২লাখ ২৫হাজার ৬শ’, টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। বেশিরভাগ প্রকল্পই নয়-ছয় করে শেষ করা হয়েছে বলে এলাকাবাসীর জানান।

হাজিরহাট ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মো. ইব্রাহিমসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের কয়েকজন শ্রমিক বলেন, সরকার গরীবদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রকল্প দিয়েছে। অথচ আমরা বাড়িতে বেকার বসে আছি। কিন্তু চেয়ারম্যানরা গরীব মানুষদের বেকার রেখে ভেকু মেশিন দিয়ে কাজ করে আমাদের সাথে প্রতারণা করেছে।

হাজিরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নিজাম উদ্দিন জানান, আমি ঢাকায় আছি; এ বিষয়ে এলাকায় এসে আপনার সাথে বিস্তারিত কথা বলবো। এসময় তিনি কোন নিউজ না করতে অনুরোধ করেন।

কমলনগর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো জহিরুল ইসলাম বলেন, শ্রমিকের পরিবর্তে ভেকু মেশিন দিয়ে কাজ করার বিষয়টি তিনি শুনেছেন। এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন তিনি।

কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুচিত্র রঞ্জন দাস বলেন, আমি কিছু সময় দেশের বাহিরে থাকায় চেয়ারম্যানরা কিছু অনিয়ম করেছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।





আর্কাইভ